গবেষণাপত্রের লেখক কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে আর্থ ইনস্টিটিউটের ডেনিয়েল ব্রেসলার বলেন, ‘এখন যে জলবায়ু নীতিমালা রয়েছে, সেটা আরও কঠোর করলে উল্লেখযোগ্যসংখ্যক জীবন বাঁচানো সম্ভব। আমি অবাক হয়েছি, এত বেশি মানুষের মৃত্যু হচ্ছে! এই সংখ্যা নিয়ে কিছুটা সংশয় থাকতে পারে, তার কারণে মৃত্যুর সংখ্যাটা কম হতে পারে, আবার বেশিও হতে পারে।’
এই গবেষণা বিজ্ঞানবিষয়ক সাময়িকী নেচার কমিউনিকেশনসে প্রকাশিত হয়েছে। গবেষণায় দেশে দেশে মানুষ তার জীবনাচরণে কী পরিমাণ কার্বন নিঃসরণে ভূমিকা রাখে, সেটা তুলে ধরা হয়েছে। এতে দেখা যায়, গড়ে ৩ দশমিক ৫ জন মার্কিন তাঁর জীবদ্দশায় যে পরিমাণ কার্বন নিঃসরণে ভূমিকা রাখেন, সেই পরিমাণ কার্বন নিঃসরণ করেন ২৫ জন ব্রাজিলিয়ান বা ১৪৬ জন নাইজেরিয়ান।
প্রতি টন কার্বন ডাই-অক্সাইড নিঃসরণের কারণে সৃষ্ট আর্থিক ক্ষতি বিশ্লেষণ করে ‘কার্বন নিঃসরণের সামাজিক প্রভাব’ বিষয়ে এই গবেষণা করা হয়েছে। একই সঙ্গে কার্বন নিঃসরণের ফলে সৃষ্ট জলবায়ু পরিবর্তনে সম্ভাব্য মৃত্যুর সংখ্যার হিসাব তুলে ধরার চেষ্টা করা হয়েছে এই গবেষণায়।
গবেষণায় উঠে আসে, বায়ুমণ্ডলে প্রতি ৪ হাজার ৪৩৪ মেট্রিক টন কার্বন ডাই-অক্সাইড নিঃসরণের হার ২০২০ সালের চেয়ে বেড়ে গেছে। যে পরিমাণ নিঃসরণ বেড়েছে, তার কারণে বৈশ্বিক উষ্ণায়নের ফলে একজন ব্যক্তির অকালমৃত্যু হতে পারে।
গড়পড়তা মার্কিন কয়লাচালিত বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো গত বছরের তুলনায় ৪০ লাখ মেট্রিক টনের বেশি কার্বন নিঃসরণ করেছে। এর ফলে চলতি শতাব্দীর শেষ নাগাদ ৯০৪ জন মানুষ মারা যেতে পারে বলে ধারণা করছেন গবেষকেরা। তবে ২০৫০ সালের মধ্যে কার্বন নিঃসরণের হার কমাতে পারলে চলতি শতাব্দীর শেষ দিকে বিশ্বের প্রায় ৭ কোটি ৪০ লাখ মানুষের জীবন রক্ষা করা সম্ভব।
জীবাশ্ম জ্বালানি পোড়ানোর কারণে বায়ু দূষণও প্রত্যক্ষভাবে মানুষের মৃত্যুর জন্য দায়ী। গত ফেব্রুয়ারিতে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের এক গবেষণায় দেখা গেছে, বায়ু দূষণের কারণে প্রতিবছর বিশ্বে ৮০ লাখের বেশি মানুষ মারা যাচ্ছে।
Leave a Reply