বাংলাদেশে মানবাধিকার লঙ্ঘন একটি গুরুতর উদ্বেগের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। বাংলাদেশে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কর্তৃক বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের অভিযোগ নতুন না। কারণে অকারণে রাজনৈতিক কর্মী, ভিন্ন মতাবলম্বীসহ অনেক ব্যক্তিকে আইনের যথাযথ প্রক্রিয়া ছাড়াই হত্যা করা হয়েছে। এটা আইনের শাসনের পরিপন্থী ও অগণতান্ত্রিক। একটি দেশের গণতন্ত্র যখন দুর্বল হয়ে যায়, মতপ্রকাশের স্বাধীনিতা বাধাগ্রস্থ হয় এবং আইনের শাসনের ভিত্তিগুলি দুর্বল হয়ে যায় তখন দেশে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড ঘটে এবং সরকার স্বৈরাচারী হয়ে যায়।
বেড়ে যায় বিরোধীদলের উপর নিপীড়ন ও পুলিশ বাহিনী দিয়ে অত্যাচার। বাংলাদেশে বর্তমান সরকারের আমলে অনেক বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড হয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কর্তৃক। এ হত্যাকাণ্ডের বিরুদ্ধে কোনো প্রতিবাদ করার সাহস ও অধিকার বাংলাদেশের মানুষ পায়নি। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মাধ্যমে মানুষের প্রতিবাদের ভাষা কেড়ে নেওয়া হয়েছে। কবি, বুদ্ধিজীবী, অসাম্প্রদায়িক ও মুক্তমনারা বাংলাদেশে ভয়ঙ্কর কঠিন সময় পার করছে। অনেকে পালিয়েছে দেশ ছেড়ে। বাংলাদেশে অনেক মুক্তমনাদের হত্যা করা হয়েছে তাদের মুক্ত চিন্তা চর্চার জন্য। যারা বাংলাদেশে গণতন্ত্র ও মৌলিক মানবাধিকার জন্য লড়ছে তাদের জেলে বন্ধি করা হচ্ছে বিনা বিচারে। বিদেশ থেকে অন্যায়ের প্রতিবাদ করলে তাদের পরিবারের উপর চলে আক্রমণ ও পরিবারকে করা হয় পুলিশ দিয়ে হয়রানি।
বাংলাদেশ থেকে বিচারের সংস্কৃতি উঠে গেছে। আমরা কি এই বাংলাদেশ চেয়েছিলাম? সরকারের ছত্রছায়ায় ব্যাংকগুলী লোটপাট হয়ে গেলো, শেয়ার বাজার ধ্বংস হয়ে গেলো, সরকারি ক্রয়ে দুর্নীতি। আমার প্রতিবাদ করতে পারি না। আইন করে আমাদের মুখ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশে পণ্য সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে নেই। মানুষ কি খেয়ে বাঁচে তা দেখার কেউ নাই। সরকার শুধু উন্নয়নের গল্প শুনায়। সাধারণ মানুষ ভয়ে কিছু বলতে পারে না রাষ্ট্রীয় দানবদের।
ধর্মীয় হিংসায় বাড়ছে ধর্মন্ধতা ও সংকোচিত হচ্ছে মুক্তচিন্তা ও ধর্মীয় স্বাধীনতা। মৌলবাদীরা সৃজনশীলতাকে ধ্বংস করে দিচ্ছে। দেশের শিক্ষা বেবস্থাকে সুকৌশলে ধ্বংস করা হচ্ছে। মনে হয় কোথাও কেউ নেই। কে আমাদের দেশকে বাঁচাবে? দেশ ও দেশের মানুষকে নিয়ে আসবে আলোর পথে।