নিউইয়র্ক সিটির জ্যাকসন হাইটস সংলগ্ন এলাকায় সবচেয়ে ভয়াবহ আকার ধারণ করেছিল করোনাভাইরাস। এখানকার এলমহার্স্ট হাসপাতালে মার্চের শেষ ও এপ্রিলে কত মানুষের মৃত্যু হয়েছে হাসপাতালের বারান্দা অথবা জরুরী বিভাগের বিশ্রামাগারে-সে হিসাব এখনও নির্ণীত হয়নি। করোনার প্রকোপ কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আসার পর প্রিয়-পরিচিতজনের মাধ্যমে সে তালিকা তৈরী করছে স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাগুলো। যার মধ্যে বিপুলসংখ্যক বাংলাদেশিও রয়েছেন। সেই এলাকায় অর্থাৎ জ্যাকসন হাইটসে ডাইভার্সিটি প্লাজায় গত শুক্রবার অনুষ্ঠিত হলো ‘করোনাভাইরাস টেস্টের ভ্রাম্যমান ক্যাম্প।’

মার্কস হোমকেয়ারের সহায়তায় এ আয়োজন করেন কমিউনিটি লিডার কাজী আজম, ফিরোজ আহমেদ, আব্দুর রহিম হাওলাদার, মোহাম্মদ হোসেন খান, শানেয়াজ, জয় চৌধুরী, ফারুক হোসেন মজুমদার প্রমুখ।

সার্বিক সমন্বয়ে ছিলেন ডেমক্র্যাটিক পার্টির কুইন্স ডিস্ট্রিক্ট লিডার এটর্নি মঈন চৌধুরী। বেলা ১২টায় শুরু এ ক্যাম্প চলে সন্ধ্যা ৬টা নাগাদ। শতশত মানুষ লাইনে দাঁড়িয়েছিলেন। নির্দিষ্ট সময়ে শেষ করতে হবেই বিধায় চারশত জনের টেস্ট করা সম্ভব হয়েছে। অবশিষ্টদেরকে অনুরোধ করা হয়েছে নিকটস্থ হাসপাতালে গিয়ে টেস্ট করতে।

এছাড়া, একই ব্যক্তিবর্গের ব্যবস্থাপনায় ২৬ জুন শুক্রবার জ্যামাইকা মুসলিম সেন্টারের সামনে অনুষ্ঠেয় ভ্রাম্যমাণ ক্যাম্পে যাবার অনুরোধ করা হয়েছে। উল্লেখ্য, কাজী আজম এবং ফিরোজ আহমেদের নেতৃত্বে এর আগের শুক্রবার অর্থাৎ ৫ জুন ব্রুকলীনের চার্চ-ম্যাক ডোনাল্ডে অনুষ্ঠিত ভ্রাম্যমাণ টেস্ট সেন্টারেও ৩ শতাধিক প্রবাসী অংশ নিয়েছিলেন।

স্মরণ করা যেতে পারে করোনায় নিউইয়র্ক সিটিতে মারা গেছে প্রায় ২৪ হাজার মানুষ। এখনও অনেকেই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকলেও নতুন সংক্রমণের হার একেবারেই সর্বনিম্নে এবং মৃত্যুর হারও দৈনিক ৩০ জনের নীচে নেমেছে। এজন্যে ৮ জুন থেকে লকডাউন উঠিয়ে নেয়ার প্রথম ধাপে পদার্পণ করেছে নিউইয়র্ক সিটি। ২২ জুন দ্বিতীয় ধাপে অফিস পাড়া, রিয়েল এস্টেট এবং সেলুন খুলে দেয়ার দ্বিতীয় ধাপে পদার্পণের সম্ভাবনার কথা ১৩ জুন অনুষ্ঠিত প্রেস ব্রিফিংয়ে স্টেট গভর্নর এ্যান্ড্রু ক্যুমো আশা পোষণ করেছেন। এজন্যে তিনি নগরবাসীকে ধন্যবাদ দিয়েছেন স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার জন্যে। এই বিধি হচ্ছে করোনাকে নিয়ন্ত্রণের একমাত্র হাতিয়ার।

উল্লেখ্য, করোনায় এই সিটিতে নিহতদের মধ্যে দুই শতাধিক বাংলাদেশিও রয়েছেন। নিউইয়র্ক অঞ্চলের প্রবাসীদের মাদার সংগঠন হিসেবে পরিচিত ‘বাংলাদেশ সোসাইটি’র প্রেসিডেন্ট কামাল আহমেদও রয়েছেন মৃত্যুর তালিকায়। এ ধরনের অনেক বিশিষ্টজন চিরবিদায় নিয়েছেন করোনায়। তাই, সকলেই সজাগ হয়ে করোনা টেস্টে অংশ নিচ্ছেন। যাদের রেজাল্ট পরিজিঠ, তারা যথাযথ সতর্কতা অবলম্বন করছেন।