বরেণ্য কন্ঠশিল্পী এন্ড্রু কিশোর মারা গেছেন। সোমবার (৬ জুলাই) সন্ধ্যা ৭টার দিকে রাজশাহীর একটি ক্লিনিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান এন্ড্রু কিশোর। মারা যাওয়ার আগে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাকে আইসিইউতে রাখা হয়।
জনপ্রিয় এ কন্ঠশিল্পীর মৃত্যুতে শোক জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী। এন্ড্রু কিশোরের মৃত্যুতে সংস্কৃতি অঙ্গনে নেমে এসেছে শোকের ছায়া।
প্রায় ১ বছর ধরে ব্লাড ক্যান্সারে ভুগছিলেন জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী এন্ড্রু কিশোর। ৯ মাস সিঙ্গাপুরে চিকিৎসা শেষে ১১ জুন দেশে ফিরেন তিনি। সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালে ছয়টি ধাপে তাকে মোট ২৪টি কেমোথেরাপি দেয়া হয়। ক্যান্সার ছাড়াও এন্ড্রু কিশোর কিডনি ও হরমোনজনিত সমস্যায় ভুগছিলেন।
সিঙ্গাপুরে চিকিৎসা নিয়ে গত ২০ জুন রাজশাহীতে বোন ডা. শিখা বিশ্বাসের নগরীর মহিষবাথান এলাকার বাসায় ওঠেন এন্ড্রু কিশোর। বোন ও দুলাভাই দুজনই চিকিৎসক হওয়ায় তাদের তত্ত্বাবধানেই চিকিৎসা ছিলেন এন্ড্রু কিশোর।
সঙ্গীত জীবনের দীর্ঘ ক্যারিয়ারে এন্ড্রু কিশোর আটবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারসহ অসংখ্য পুরস্কার পেয়েছেন। ১৯৫৫ সালের ৪ঠা নভেম্বর রাজশাহীতে জন্মগ্রহণ করেন এন্ড্রু কিশোর। তার সংগীত জীবনের পাঠ শুরু হয় রাজশাহীর আবদুল আজিজ বাচ্চুর কাছে। একসময় গানের নেশায় রাজধানীতে ছুটে আসেন। মুক্তিযুদ্ধের পর তিনি রবীন্দ্রসংগীত, নজরুলসংগীত, আধুনিক গান, লোকগান ও দেশাত্মবোধক গানে রেডিওর তালিকাভুক্ত শিল্পী হন।
১৯৭৭ সালে আলম খানের সুরে মেইল ট্রেন চলচ্চিত্রে ‘অচিনপুরের রাজকুমারী নেই যে তাঁর কেউ’ গানের মধ্য দিয়ে এন্ড্রু কিশোর চলচ্চিত্রে প্লেব্যাক শুরু করেন। এরপর বাঙালি গানের শ্রোতাদের একে একে উপহার দেন অসংখ্য কালজয়ী গান।
তার জনপ্রিয় গানের মধ্যে রয়েছে- জীবনের গল্প আছে বাকি অল্প, হায়রে মানুষ রঙিন ফানুস, ডাক দিয়াছেন দয়াল আমারে, আমার সারা দেহ খেয়ো গো মাটি, আমার বুকের মধ্যে খানে, আমার বাবার মুখে প্রথম যেদিন শুনেছিলাম গান, ভেঙেছে পিঞ্জর মেলেছে ডানা, সবাইতো ভালোবাসা চায়, বেদের মেয়ে জোসনা আমায় কথা দিয়েছে, তুমি আমার জীবন আমি তোমার জীবন, ভালো আছি ভালো থেকো, তুমি মোর জীবনের ভাবনা, চোখ যে মনের কথা বলে, পড়েনা চোখের পলক, পদ্মপাতার পানি, ওগো বিদেশিনী, তুমি মোর জীবনের ভাবনা, আমি চিরকাল প্রেমের কাঙাল ইত্যাদি।