বাংলাদেশে করোনাভাইরাস মহামারির মধ্যে বেসরকারি চিকিৎসা ব্যবস্থার বেহাল অবস্থা নিয়ে উদ্বেগ-অভিযোগ অব্যাহত রয়েছে।
অনেক রোগী অভিযোগ করেছেন, জ্বর, সর্দি-কাশির মতো লক্ষণ থাকলেই এসব হাসপাতালে হাসপাতালে ঘুরেও অন্য রোগের চিকিৎসা পাওয়া যাচ্ছে না।
অনেক বেসরকারি হাসপাতাল -ক্লিনিকে চিকিৎসা সেবা বন্ধ করেও দেওয়া হয়েছে।
এমন প্রেক্ষাপটে সরকারের পক্ষ থেকে হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে কোনো বেসরকারি হাসপাতাল বা ক্লিনিক চিকিৎসা না দিলে লাইসেন্স বাতিলসহ বিভিন্ন ব্যবস্থা নেয়া হবে।
তবে হাসপাতাল মালিকরা বলেছেন, সুনির্দিষ্ট গাইডলাইন এবং সমন্বয় ছাড়া শুধু হুমকি দিয়ে পরিস্থিতির উন্নতি করা যাবে না।
বাংলাদেশের বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসার ব্যাপারে সরকারি পর্যায়ে কয়েক দফা নির্দেশনা, বেসরকারি হাসপাতাল মালিকদের প্রতিশ্রুতির পরেও চিকিৎসার বেহাল চিত্র বদলায়নি। কিন্তু কোন পক্ষই এর দায় নিচ্ছেন না। সাধারণ রোগীরাই হচ্ছেন ভোগান্তির শিকার।
হৃদরোগে আক্রান্ত ৬০ বছরের বেশি বয়স্ক একজন ব্যক্তিকে নিয়ে তার স্বজনরা ঢাকায় তিনটি বেসরকারি হাসপাতালে ঘুরেও তাকে ভর্তি করাতে পারেননি।
সপ্তাখানেক আগের এই ঘটনা সম্পর্কে তার স্বজনদের একজন পারভিন হাসান বলেছেন, তারা শেষপর্যন্ত উচ্চ পর্যায় থেকে অনেক তদ্বির করে সরকারি হৃদরোগ ইনস্টিটিউট হাসপাতালে তাদের রোগীকে ডাক্তার দেখাতে সক্ষম হয়েছিলেন।
“তিনটা হসপিটালে গিয়েও কিন্তু আমরা ভর্তির সুযোগ পাইনি। এরা ভর্তি নেয়নি। এরা বলেছে, যেহেতু আপনার জ্বর আছে, আপনার করোনা আছে। আমরা নেবো না। কিন্তু আমার রোগীর করোনা ছিল না। আমরা তাকে মুগদা হাসপাতালে নিয়ে গেলেতো সংক্রমণ হতে পারতো। তারপর হৃদরোগ ইনস্টিটিউটে আমরা গেলাম। সেখানেও আমাদের অনেক রেফারেন্স এবং হাই লেভেল থেকেও কল দিতে হয়েছে। তখন তারা ভর্তি নেয়।”
“আমার রোগী তো করোনার রোগী ছিলেন না। ওনার হার্ট অ্যাটাক করেছিল। কিন্তু আমাদের ভোগান্তিটা হচ্ছে, আমরা হাসপাতালে হাসপাতালে ঘুরে ভর্তির সুযোগ পাইনি।”
দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শুরুর পর থেকেই হাসপাতালে হাসপাতালে ঘুরে চিকিৎসা না পাওয়ার এমন অনেক অভিযোগ সংবাদমাধ্যমে এসেছে। এমন ভূক্তভোগীর অনেকের অভিযোগ নিয়ে সামাজিক মাধ্যমেও অনেক আলোচনা হয়েছে।
দু’দিন আগে একজন অতিরিক্ত সচিব গৌতম আইচ সরকার কিডনি জটিলতায় অসুস্থ হলে তাকে নিয়ে তার স্বজনরা একের পর এক বেসরকারি এবং সরকারি হাসপাতাল ঘুরেছেন এবং চিকিৎসা না পেয়ে তার মৃত্যু হয়েছে। তার পরিবারের এমন অভিযোগের প্রেক্ষাপটে বেসরকারি হাসপাতালের চিকিৎসা নিয়ে উদ্বেগের বিষয় আবার আলোচনায় এসেছে।
Leave a Reply