1. admin@ukbanglanews.com : admin :
শনিবার, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০৬:৫২ অপরাহ্ন
ব্রেকিং নিউজ :
ন্যাশনাল ফ্রিল্যান্সারস কনফারেন্স ১৯ আগস্ট নেক্সট ভেঞ্চারস প্রেজেন্টস ইইউর বাজারে পোশাক রপ্তানির পরিমাণে চীনকে টপকে শীর্ষে বাংলাদেশ ইলন মাস্কের স্টারলিংককে নজরদারির সুযোগসহ ‘যদি কিন্তু’র শর্ত বাংলাদেশের SSDnetworks Job Advertisement ট্রাম্পের অভিশংসনের বিচার ‘হতেই হবে’: বাইডেন মহারাজ নির্বাচিত হলে পৌরবাসীর প্রত্যাশা পূরণের দায়িত্ব নানকের চট্টগ্রাম সিটি নির্বাচনে ভোট বুধবার: প্রচার-প্রচারণা শেষ ম্যাজিস্ট্রেটের সঙ্গে দুর্ব্যবহারের ঘটনায় নিঃশর্ত ক্ষমা চাইলেন কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার ১০ বছর ধরে নন-এমপিও শিক্ষকদের অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছেন এমপিওভুক্তরা ‘সহযোগী মুক্তিযোদ্ধা’ সনদ বিক্রি একটি সংগঠনের

করোনাভাইরাস: লকডাউনের মধ্যে অস্বাভাবিক বিদ্যুৎ বিল, সমাধান হবে কীভাবে

UK বাংলা News
  • আপডেট টাইম : মঙ্গলবার, ২৬ মে, ২০২০
  • ৯০ বার

ঢাকার কলাবাগানের বাসিন্দা শাহনাজ পারভীনের প্রতিমাসে বিদ্যুৎ বিল আসে ১০০০ টাকার মধ্যে। কিন্তু লকডাউনের কারণে দুইমাস পরে যে বিল এসেছে, তাতে তার প্রতিমাসের বিল এসেছে দেড় হাজার টাকা করে। অথচ তার বাসায় ফ্রিজ আর টিভি, কয়েকটি ফ্যান ছাড়া অন্যকোন বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম নেই।

তারচেয়েও বেশি জটিলতায় পড়েছেন আরেকজন বাসিন্দা ফারহানা মিলি। তিনি একটি ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেছেন, ”ঢাকা শহরে একুশ বছর ধরে বাসা ভাড়া করে থাকছি– এত টাকার ইলেক্ট্রিসিটি বিল চোখে দেখার সৌভাগ্য কখনও হয়নি। ‍দু’মাসের জন্য ১১,১২০ টাকা– গড়ে প্রতি মাসে পৌনে ছয় হাজার টাকা। কীভাবে সম্ভব!”

তিনি জানাচ্ছেন, তার প্রতিবেশীর বাসায় একাধিক এয়ারকন্ডিশনার থাকার পরেও তার বিদ্যুৎ বিল তার চেয়ে কম এসেছে।

”প্রতি গরমে আমার এ বাসায় মাসপ্রতি বিল সর্বোচ্চ একবার হয়েছিল ১৯০০ টাকা, যেটিও ছিল অস্বাভাবিক। সাধারণত ১৪০০ থেকে ১৬০০ টাকা দিয়ে এসেছি। শীতের দিনে হাজার থেকে ১২০০ টাকা। জানি না এবার কী হয়েছে। হয়তো বিদ্যুৎ বিভাগ বলবে, আমরা বিদ্যুৎ খেয়েছি বসে বসে!” তিনি লিখেছেন।

ফারহানা মিলি বিবিসি বাংলাকে বলছেন, ”অনুমান নির্ভর বিদ্যুৎ বিল হলেও, এতো টাকার বিল তো হওয়ার কথা নয়। আর তারা অনুমান নির্ভর বিল দেবেই বা কেন? হয় ঠিকমতো বিল দেবে, না হলে পরে সব একবারে দেবে। আমি যা ব্যবহার করতো, সেটারই তো বিল আসার কথা। অনুমানের ওপর আমাকে বিল দিতে বলা হবে কেন?”

শুধু ঢাকাতেই যে এই চিত্র, তা নয়। ঢাকার বাইরে বেশ অনেক স্থানে স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি বিল পাওয়ার অভিযোগ করছেন গ্রাহকরা।

শরীয়তপুরের বাসিন্দা শামিমুল হক জানাচ্ছেন, সাধারণ প্রতিমাসে যে টাকার বিদ্যুৎ বিল আসে, এই দুই মাসে কয়েকশো টাকা বেশি বিল এসেছে।

প্রতিমাসে গড়ে তাদের ১০০০-১২০০ টাকা বিল আসে। কিন্তু গত দুইমাসের বিল এসেছে ৪০০০ টাকা।

বরগুনার বাসিন্দা নাজমুল হক জানাচ্ছেন, সাধারণত প্রতিমাসে তার বাড়িতে যতটা বিল আসে, গত দুইমাসে তার চেয়ে কয়েকশো টাকা করে বেশি এসেছে।

কারণ কী?

বিদ্যুৎ বিভাগের একাধিক কর্মকর্তা ও মিটার রিডারদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সাধারণত বিদ্যুৎ কোম্পানিগুলোর মিটার রিডাররা বাসায় বাসায় গিয়ে মিটারের বর্তমান রিডিং নিয়ে আসেন। সেই রিডিং থেকে আগের মাসের প্রাপ্ত রিডিং বাদ দিলেই এই মাসের ব্যবহৃত বিদ্যুতের হিসাব পাওয়া যায়। সেগুলো বিভিন্ন স্ল্যাব অনুযায়ী হিসাব করে বিদ্যুৎ ব্যবহারের বিল করা হয়।

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শুরু হওয়ার পর অঘোষিত লকডাউন শুরু হওয়ার পর থেকে গত দুইমাস কোন মিটার রিডার কারো বাসায় গিয়ে মিটার পর্যবেক্ষণ করেননি। এ কারণে মার্চ মাসে এ কারণে কাউকে কোন বিলও পাঠানো হয়নি।

সরকারের তরফ থেকে ঘোষণা করা হয়, ৩১ মার্চ পর্যন্ত কোনরকম জরিমানা ছাড়াই বিদ্যুৎসহ সব পরিষেবার বিল পরিশোধ করা যাবে।

মে মাসের মাঝামাঝি অনেকটা হঠাৎ করেই মার্চ ও এপ্রিল মাসের বিল একত্রে গ্রাহকদের পাঠানো হয়। কিন্তু করোনাভাইরাস সংক্রমণ এড়াতে মিটার রিডাররা এই বিল কোন বাসায় না গিয়ে অনুমানের ভিত্তিতে তৈরি করেন।

ঢাকা পাওয়ার ডেভেলপমেন্ট কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক বিকাশ দেওয়ান বলছেন, ” আমাদের আওতাভুক্ত এলাকার মধ্যে ঢাকার পাশাপাশি নারায়ণগঞ্জও রয়েছে। সাধারণ ছুটি শুরু হওয়ার পর আমাদের মিটার রিডাররা আর বাড়ি বাড়ি গিয়ে মিটার দেখতে পারেনি। আমাদেরও শুধুমাত্র জরুরি সেবা চালু রয়েছে। এ কারণে গড় ব্যবহারের ওপর ভিত্তি করে বিল করা হয়েছে। ”

তবে বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মুহাম্মদ মতিউর রহমান বলছেন, ” ছুটির কারণে মানুষ বেশিরভাগ সময় ঘরে থাকছে। গরমের সময় ফ্যান বা এসিও বেশি ব্যবহৃত হচ্ছে। অন্যান্য সময়ের তুলনায় কিন্তু বাসায় বিদ্যুৎ বেশি ব্যবহার করা হচ্ছে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই বিদ্যুতের বিল একটু বেশি আসবে।”

তিনি জানান, মিটার রিডারদের এ কারণে গড়ে ২০ শতাংশ কমবেশি করে অনুমানের ওপর বিল করতে বলা হয়েছিল। কিন্তু সেখানে ‘দুর্ঘটনা’ ক্রমে কিছু বিল অস্বাভাবিক বেশি হয়ে যেতে পারে বলে তিনি বলছেন।

তিনি বলছেন, মিটার রিডাররা হাতে লিখে বিল তৈরি করে জমা দেয়ার পরে সেটা কম্পিউটারে পোস্টিং দেয়া হয়। সেখান থেকে বিল তৈরি হয়ে গ্রাহকদের কাছে যায়। একদিকে তারা অনুমানের ওপর এই বিল করেছেন, আবার সেটি লেখা বা কম্পিউটারে পোস্টিংয়ের সময় কোন ভুল ক্রুটির কারণে বিলের অংক বেশি হয়ে যেতে পারে বলে তিনি মনে করছেন।

কর্মকর্তারা বলছেন, মানুষজন বাড়িতে থাকার কারণে বিদ্যুতের ব্যবহার কিছু বেড়েছে
কর্মকর্তারা বলছেন, মানুষজন বাড়িতে থাকার কারণে বিদ্যুতের ব্যবহার কিছু বেড়েছে

অস্বাভাবিক বিলের কি হবে?

ডিপিডিসি, ডেসকো বা পল্লী বিদ্যুতের কর্মকর্তারা বলছেন, যারা অস্বাভাবিক বিল পেয়েছেন, তাদের উদ্বিগ্ন হওয়ার কোন দরকার নেই। নিকটস্থ দপ্তরে যোগাযোগ করলে তাদের এসব বিল ঠিক করে দেয়া হবে। পাশাপাশি জুন মাসে মিটারের রিডিং দেখে বিল করা হলে সেখানেও সমন্বয় করা হবে।

তবে অনেক গ্রাহক যে অস্বাভাবিক বিল পেয়েছেন বলে অভিযোগ করছেন, এই প্রসঙ্গে ডিপিডিসি ব্যবস্থাপনা পরিচালক বিকাশ দেওয়ান বলছেন, ”এটি আমাদেরও দৃষ্টিগোচর হয়েছে। অনেকে আমাদের সঙ্গে এ ব্যাপারে যোগাযোগ করেছেন। যারা যোগাযোগ করেছেন তাদের বিল ঠিক করে দেয়া হয়েছে। বাকি যারা রয়েছেন, তাদের বিলও সামনের মাসে ঠিক হয়ে যাবে।”

পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মুহাম্মদ মতিউর রহমান বলছেন, ”মে মাস থেকেই আমাদের মিটার রিডাররা আবার বাড়ি বাড়ি গিয়ে মিটার দেখে বিল আনতে শুরু করেছেন। ফলে আগের বিলের সঙ্গে বর্তমান রিডিং মিলিয়ে নতুন বিল আসবে। কেউ যদি আগে বেশি টাকা জমা দিয়ে ফেলেন, এই মাসে তার বিল অনেক কম আসবে। আবার কেউ বিল জমা না দিলে এই মাসেই রিডিং অনুযায়ী বিল আসবে।”

ঢাকা ইলেক্ট্রিসিটি সাপ্লাই কোম্পানি লিমিটেডের (ডেসকো) ব্যবস্থাপনা পরিচালক কাওসার আমির আলী বলছেন, ” আমাদের এরকম বেশি বিল হওয়ার ঘটনা খুব কম। কিন্তু তারপরেও অভিযোগ এলে সবগুলো দপ্তরকে বলা রয়েছে যেন তাক্ষৎনিকভাবে বিল ঠিক করে দেয়া হয়। ”

তিনি বলছেন, বিদ্যুৎ বিল আসে মিটারের ইউনিট ব্যবহারের ওপর ভিত্তি করে। কারো বিল বেশি এসেছে মানে সেখানে ইউনিট ব্যবহার বেশি দেখানো হয়েছে।

তিনি পরামর্শ দিয়ে বলছেন, কেউ যদি বিলের টাকা জমা দিয়ে থাকেন, তাহলে পরের মাসে তার ব্যবহৃত ইউনিটের সংখ্যা অনেক কম আসবে। ফলে স্বাভাবিকভাবে তার বিলও কম হবে, অর্থাৎ সেটা সমন্বয় হয়ে যাবে। আর কেউ এখন এই বিল জমা দিতে না চাইলে পরের মাসে গিয়ে তার আসল ব্যবহারের বিল আসবে। ফলে সেখানেও এটা সমন্বয় হয়ে যাবে।

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2023 UK বাংলা News
Desing & Developed By UK বাংলা News
error: Content is protected !!