বিশ্বের শীর্ষ প্রযুক্তি উদ্যোক্তা ইলন মাস্কের মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান স্টারলিংকের বাংলাদেশের বাজারে প্রবেশের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে আগ্রহ দেখানোর পর সরকারের মন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠকে অংশ নিয়েছেন স্টারলিংকের প্রতিনিধিরা। আগেরবার ‘না’ করে দিলেও এবার সরকার তাদের ব্যবসা ও প্রযুক্তি বুঝতে চায়। পাশাপাশি টেলিযোগাযোগ খাতে সরকারের বিধিসম্মত প্রবেশাধিকারের (ল’ফুল ইন্টারসেপশন) বা নজরদারির যে নীতি আছে, সে ব্যাপারে শর্ত দেওয়া হয়েছে স্টারলিংককে। ইলন মাস্কের মহাকাশবিষয়ক সংস্থা স্পেসএক্সের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান স্টারলিংক। প্রচলিত ইন্টারনেট সেবা মুঠোফোন টাওয়ার ও সাবমেরিন কেব্লনির্ভর হলেও স্টারলিংক কৃত্রিম উপগ্রহের মাধ্যমে ইন্টারনেট সেবা দেয়। এ কারণে পৃথিবীর দুর্গম অঞ্চলেও দ্রুতগতির ইন্টারনেট সেবা দেওয়ার সক্ষমতা রয়েছে স্টারলিংকের। দুই বছর আগে থেকেই স্টারলিংক কর্তৃপক্ষ বাংলাদেশ সরকারের বিভিন্ন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করে যাচ্ছিল।
সম্প্রতি সরকারের পক্ষ থেকেও আগ্রহ দেখানো হয়েছে। গত বুধবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে আইসিটি ভবনে তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি বিভাগের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহ্মেদের সঙ্গে বৈঠক করেন স্টারলিংকের গ্লোবাল অ্যাফেয়ার্স ম্যানেজার জোয়েল মেরিডিথ ও গ্লোবাল লাইসেন্সিং অ্যান্ড অ্যাকটিভেশন ম্যানেজার পার্নিল উর্ধারশি। আইসিটি বিভাগের বিভিন্ন সংস্থা ও প্রকল্পপ্রধানেরাও সে বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠক নিয়ে প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহ্মেদ নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুকে পেজে লিখেছেন, ‘দুর্গম অঞ্চলে ও দুর্যোগকবলিত জনগোষ্ঠীকে উচ্চগতির ইন্টারনেট সেবা দিতে স্টারলিংকের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক হয়েছে। আশা করছি, দ্রুতই পাইলট কার্যক্রম শুরু হবে।’
গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর বাংলাদেশ স্যাটেলাইট কোম্পানি লিমিটেডের সঙ্গে স্টারলিংকের দুই প্রতিনিধির বৈঠক হয়েছে। এতে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার, বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) চেয়ারম্যান, কমিশনাররাসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ স্যাটেলাইট কোম্পানি লিমিটেডের চেয়ারম্যান শাহ্জাহান মাহমুদ প্রথম আলোকে বলেন, অনেক দিন থেকেই তারা আসতে চাচ্ছে। দেড় মাস আগে পরীক্ষামূলকভাবে দেখার জন্য বিটিআরসি থেকে অনুমোদন নেওয়া হয়। গত সপ্তাহে স্টারলিংকের সরঞ্জাম বাংলাদেশে এসেছে।
গত বুধবারের বৈঠক সূত্রে জানা যায়, সরকার এখন স্টারলিংকের প্রযুক্তি সম্পর্কে বুঝতে চায়। যদি কখনো কোনো জরুরি পরিস্থিতিতে প্রয়োজন হয়, তখন কাজে লাগানোর জন্য যেন বিকল্প হিসেবে ভাবা যায়। তবে কোনো কিছুই সিদ্ধান্ত হয়নি।
Leave a Reply