স্বাধীনতা পরবর্তী কাল থেকে আমাদের সুজলা-সুফলা, শান্তিপ্রিয় ও গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসাবে বাংলাদেশ ছিল সর্বজন স্বীকৃত রাষ্ট্র। স্বাধীনতা পরবর্তী কাল থেকে এ দেশের কৃষক ও শ্রমজীবী মেহনতি মানুষ এ দেশের গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা এবং অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক উন্নতির লক্ষ্যে নিরলস প্ররিশ্রম করে যাচ্ছে । যার প্রেক্ষিতে স্বাধীনতার ৫৪ বছর পরেও গণতন্ত্রের মুক্তি এবং অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক প্রবৃদ্ধির জন্য এখনও আন্দোলন করছি। মিথ্যাদর্শে ও পাশ্চাত্যের হিংসাত্মক প্রভাবে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার নামে আমাদের রাজনীতি আজও বিভক্ত ও কুলষিত। এ বিভক্ত ও কুলষিত রাজনীতি কারণে আমাদের সামাজিক ও ধর্মীয় মূল্যবোধ আজ তলানিতে।
বর্তমানে রাজনীতি ও ধর্মের নামে আমাদের রাষ্টে হচ্ছে নানান অপকর্ম ও অসামাজিক কাৰ্যকলাপ। যা আমাদের স্বাধীনতার চেতনার বিরোধী। অতীতের তুলনায় বাংলাদেশে রাজনৈতিক ও ধর্মীয় হিংসা বহুগুনে বেড়েছে। যে কারণে বর্তমানে মানুষ হত্যা বেড়েছে, বেড়েছে ভ্রান্ত ও ভুল ধর্মীয় শিক্ষার প্রভাব। ফলশ্রুতিতে ব্যাক্তিগত, সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় জীবনে নৈতিক অবক্ষয় বহুগুনে বৃদ্ধি পেয়েছে।
বর্তমানে বাংলাদেশের মানুষের ধর্মীয় ও গণতান্ত্রিক স্বাধীনতা নেই। যার প্রেক্ষাপটে বিরোধীদলীয় নেতা ও কর্মীরা জেলে। তাদের অন্যায়, তারা দেশের গণতন্ত্রের কথা বলে, আইনের সুশাসনের কথা বলে এবং অগনত্রান্তিক ভোটের বিরুদ্ধে কথা বলে। স্বাধীনতার ৫৪ বছর পরেও বাংলাদেশে মানুষ ভোটের স্বাধীনতা পায়নি। আজও কেন ক্রসফারের নামে বিনা বিচারের বাংলাদেশে মানুষ হত্যা করা হয়? কেন বিনা বিচারে জেলে আটক রাখা হয় অন্যায়ের প্রতিবাদীদের? কেন হত্যা করা হয় মৌলবাদীদের বিরুদ্ধে কথা বলায় নিরপরাধ সুশীলদের?
ধর্মনিরপেক্ষতার কথা বাংলাদেশের সংবিধানে উল্ল্যেখ থাকলেও, বাস্তবে এর কোনো প্রয়োগ নেই। আমাদের সংবিধানে মৌলিক অধিকার ও রাষ্ট্রপরিচালনার মূলনীতি লিপিবদ্ধ থাকলেও বর্তমানে অগণতান্ত্রিক উপায়ে নির্বাচিত সরকার অবৈধভাবে আমাদের শাসন ও অত্যাচার করে যাচ্ছে । যার উদহারণ স্বরূপ অতীতে বাংলাদেশে মুক্তচিন্তক, কবি ও সুশীলসহ বহু নিরপরাধ ব্যাক্তিকে হত্যা করেছে ধর্মান্ধ মৌলবাদীরা। এ হত্যার কোনো বিচার হয় না বাংলাদেশে, এ অবৈধ শাসনের কারণে।
কবি, কবিতা ও মুক্তচিন্তক ছাড়া কোনো উন্নত দেশ হয়না। জন্ম নেয় ধর্মন্ধতা। শিক্ষার মান কমে যায়। আমাদের অবৈধ ও অগণতান্ত্রিক সরকার ধর্মের নামে বিভিন্ন মডেল মসজিদ করে, কিন্তু স্বশিক্ষিত জাতি গঠনে লাইব্রেরি কিংবা সুচিকিৎসা বাস্তবায়নে হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করে না। যার কারণে ক্রমেই দেশ যাচ্ছে ধর্মন্ধতার দিকে। মৌলবাদীরা প্রতিনিয়ত হুঙ্কার দিচ্ছে বাংলাদেশের মুক্তচিন্তক ও ধর্মনিরেপক্ষ সুশীলদের বিরুদ্ধে। কিন্তু বর্তমান অবৈধ সরকার মৌলবাদীসের সাথে আঁতাত করে রাজনৈতিক স্বার্থে। মুক্তচিন্তক ও ধর্মনিরেপক্ষ সুশীলদের কোন নিরাপত্তা সরকার নিশ্চিত করে না।
যার কারণে হুমায়ন আজাদ, শাজাহান বাচ্চু , অভিজিৎ রায় সহ বহু মুক্তচিন্তক ও ধর্মনিরেপক্ষ সুশীলদের হত্যা করা হয় এবং তাদের হত্যার আজও কোন বিচার হয়নি। কারণ ওরা মুক্ত চিন্তায় ও বিজ্ঞানে বিশ্বাসী ছিল এবং মানবাধিকার ও ধর্মনিরেপেক্ষতার পক্ষে কাজ করতো । যে কারণে বর্তমানে ক্রমেই বাংলাদশ ধর্মনিরেপেক্ষক সুশীল, কবি , মুক্তচিন্তক শুন্য হয়ে যাচ্ছে , বাড়ছে মৌলবাদীদের আনাগোনা। গণতন্ত্র ছাড়া কোন দেশের উন্নয়ন টেকসই হয় না , দেশ এগিয়ে যেতে পারে না। এখনই সময় এসেছে বাংলাদেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার। এবং আমাদেরকেই এ দেশকে বাসযোগ্য করে গণতন্ত্র ও শান্তি ফিরিয়ে আন্তে হবে।