২০২২ সালের ৩১ মার্চ পর্যন্ত এই ব্যবস্থা জারি থাকবে। অবশ্য এর আগেই পাঁচ লাখ পর্যটককে ভিসা দেওয়া হয়ে গেলে আলাদা কথা। আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় সরকারিভাবে জানানো হয়েছে, এই ভিসা ফি বাবদ সরকারের আদায় কমবে ১০০ কোটি রুপি। কিন্তু এর মাধ্যমে পর্যটনশিল্পকে চাঙা করে তোলা যাবে।
সরকারি হিসাব অনুযায়ী, কোভিড শুরুর আগে ২০১৯ সালে ১ কোটি ৯৩ হাজার পর্যটক ভারতে এসেছেন। তাঁরা এ দেশে ৩০ বিলিয়নের বেশি ডলার খরচ করেছেন। গড়ে একেকজন পর্যটক এ দেশে ২১ দিন থাকেন। তাঁরা দৈনিক গড়ে খরচ করেন ৩৪ ডলার বা ২ হাজার ৪০০ রুপি।
কোভিডের দরুণ ভারতীয় অর্থনীতি বিপর্যস্ত। বৃদ্ধির হার ঋণাত্মক। কবে অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াতে পারবে, তার আশু কোনো নিশ্চয়তা নেই। কোভিডের দ্বিতীয় ঢেউ মোটামুটিভাবে স্তিমিত হওয়ার কারণে সরকার মনে করছে, সবচেয়ে খারাপ সময় সম্ভবত কাটিয়ে আসা গেছে। এ অবস্থায় সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত পর্যটনশিল্পকে চাঙা করতে এ সিদ্ধান্ত। অর্থনীতিকে ঘুরে দাঁড়াতে সাহায্য করতে গত মঙ্গলবার অর্থমন্ত্রী যে আট দফা দাওয়াইয়ের কথা ঘোষণা করেন, পর্যটনশিল্পের জন্য ব্যবস্থা তার অন্যতম।
বিনা মূল্যে পাঁচ লাখ পর্যটন ভিসা দেওয়ার পাশাপাশি এই শিল্পের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের আর্থিক সাহায্যের কথাও অর্থমন্ত্রী জানিয়েছেন। পর্যটন মন্ত্রণালয়ের স্বীকৃতি পাওয়া ১০ হাজার ৭০০ গাইড বিভিন্ন রাজ্যে রয়েছেন। সরকার–স্বীকৃত ট্রাভেল ও ট্যুরিস্ট এজেন্সির সংখ্যা ১ হাজারের মতো। এসব সংস্থাকে কেন্দ্রীয় সরকার ১০ লাখ রুপি পর্যন্ত ঋণ দেবে, যাতে তারা দেনা শোধ করে নতুনভাবে ব্যবসা শুরু করতে পারে। গাইডদের ১ লাখ রুপি করে ঋণ দেওয়া হবে। এই ঋণ পেতে কোনো কিছু বন্ধক রাখতে হবে না। ঋণের জন্য কোনো ফি দিতে হবে না বলে সরকারি বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
ভারতে প্রতিবছর যত পর্যটক আসেন, তাঁর সিংহভাগ আসেন বাংলাদেশ থেকে। বাংলাদেশিদের সবচেয়ে বেশি ভিসা দেওয়া হয়। এমনিতে ভারতীয়দের বাংলাদেশ যেতে বা বাংলাদেশিদের ভারতে আসতে কোনো ভিসা ফি দিতে হয় না। কিন্তু বাংলাদেশিদের ভারতের ভিসা পেতে হলে বেসরকারি সংস্থার মাধ্যমে আবেদন করতে হয়। সেই সংস্থাকে ভিসার জন্য পর্যটকপ্রতি ৬৫০ টাকা করে দিতে হয়। বাংলাদেশিরা সেটাই ভারত যাত্রার ‘ভিসা ফি’ বলে মনে করেন। সরকারি বিজ্ঞপ্তিতে এই বিষয়টির অবশ্য কোনো উল্লেখ নেই। ফলে প্রথম পাঁচ লাখ বিনা খরচের পর্যটন ভিসার লাভ বাংলাদেশিরা নিতে পারবেন কি না, সেই উত্তর অজানা।
Leave a Reply