গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যা থেকে গভীর রাত পর্যন্ত অস্কারজয়ী এই শিল্পীর সুর ছুঁয়ে গেছে অগণিত দর্শক-শ্রোতার হৃদয়।
বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) আয়োজিত এই মেগাকনসার্টের দ্বিতীয় পর্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে সংগীত উপভোগ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বিকেলে জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের প্রথম পর্ব শুরু হয়। এরপর মঞ্চে আসে জনপ্রিয় ব্যান্ডদল মাইলস। ‘চাঁদ তারা সূর্য নও তুমি/নও পাহাড়ি ঝরনা/যদি বলি ফুল তবুও হবে ভুল/তোমার তুলনা হয় না’—নব্বই দশকের সুপারহিট এই গান দিয়ে শুরু করে মাইলস। অন্যতম দেশসেরা এই ব্যান্ডদল তাদের বিখ্যাত আরো কয়েকটি গান পরিবেশন করে মাতিয়ে তোলে দর্শকদের।
উপস্থাপক রুমানা মালিক মুনমুন মাইলসের পরিবেশনার পরই সংসদ সদস্য ও জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী মমতাজ বেগমকে মঞ্চে আমন্ত্রণ করেন। মমতাজ শুরু করেন তাঁর নতুন গান ‘জয় মুজিবুর, জয় স্বাধীনতা, বাংলাদেশের জয়’ গানটি দিয়ে। এরপর একে একে গেয়ে শোনান ‘না জানি কোন অপরাধে দিলা এমন জীবন’, ‘আমার ঘুম ভাঙায়া গেলো গো মরার কোকিলে’, ‘নান্টু ঘটকের কথা শুইনা’ ও ‘বন্ধু তুই লোকাল বাস’-এর মতো মঞ্চ মাতানো গানগুলো। বহু দর্শক বিপুল উত্সাহে গলা মেলাচ্ছিল তাঁর সঙ্গে।
দর্শক প্রবল আগ্রহ নিয়ে অপেক্ষা করছিল অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্বে আয়োজনের মধ্যমণি এ আর রহমান ও তাঁর দলের জন্য। তবে বেরসিক বৃষ্টি বাগড়া দিয়ে তাদের ধৈর্যের ভালোই পরীক্ষা নিয়েছে। বৃষ্টিজনিত বিরতি শেষে এ আর রহমান সদলে আলো ঝলমলে মঞ্চে এলে বাঁধভাঙা আনন্দে মাতে দর্শক। একের পর এক মনপ্রাণ ভরানো গানে এই জীবন্ত কিংবদন্তিও যেন তাদের ভালোবাসা আর মুগ্ধতার প্রতিদান দেন।
এ আর রহমান এবার দ্বিতীয়বারের মতো এসেছেন বাংলাদেশে। এর আগেও বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের আমন্ত্রণে তিনি এসেছিলেন। বিসিবির উদ্যোগে ‘ক্রিকেট সেলিব্রেটস মুজিব ১০০’ শীর্ষক এ আয়োজন ২০২০ সালেই হওয়ার কথা ছিল। তবে করোনা মহামারির কারণে তখন আসতে পারেননি। দুই বছর পর এলেন এবং জয় করলেন বরাবরের মতোই।
গভীর রাত পর্যন্ত এ আর রহমান ও তাঁর সহশিল্পীরা গান গেয়ে শোনান। প্রধানমন্ত্রীসহ বিশিষ্ট অতিথি ও দর্শক-শ্রোতাদের চমত্কৃত করে গেয়ে ওঠেন ‘জয় জয় জয় বাংলাদেশ’। তাঁর আরেকটি গানে ছিল ‘সোনার বাংলা’ কথাটিও। একসময় মঞ্চে আসেন আরেক বিশিষ্ট শিল্পী হরিহরণ। প্রায় মধ্যরাতে আরেক চমক। ডিজিটাল প্রযুক্তির কল্যাণে মঞ্চের পর্দায় ‘আবির্ভূত হন’ সম্প্রতি প্রয়াত সংগীত কিংবদন্তি লতা মঙ্গেশকর। তাঁর রেকর্ড করা কণ্ঠের সঙ্গে গলা মেলান এ আর রহমান। সৃষ্টি হয় সুরের ঐন্দ্রজালিক আবহ। গিটার বাজিয়ে গান করেন শিল্পী রশিদ আলী। ছিল যন্ত্রসংগীতের পরিবেশনাও।
Leave a Reply